Pageviews

News
Loading...

THAI LOTTERY

কোয়েল পালন বাংলাদেশে পোল্ট্রি শিল্পে এক নতুন সংযোজন

বাংলাদেশে কোয়েল পালন একটি সম্ভাবনাময় খাত (মিসেস শামিমা হোসাইন)

ভূমিকা
কোয়েল পালন বাংলাদেশে পোল্ট্রি শিল্পে এক নতুন সংযোজন। গৃহপালিত বিভিন্ন পাখির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র প্রজাতির পাখি কোয়েল। কোয়েলের আদি জন্মস্থান জাপানে। সর্বপ্রথম জাপানী বিজ্ঞানীরা কোয়েলকে গৃহপালিত পাখি হিসেবে পোষ মানানোর উপায় উদ্ভাবন করেছেন। পরবর্তীতে জাপানসহ পৃথিবীর অনেক দেশ কোয়েলকে একটি লাভজনক পোল্ট্রি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। হাঁস-মুরগির সাথে আমরা যতোটা পরিচিত কোয়েলের সাথে ততোটা পরিচিত নই। হাঁস-মুরগির মতো বহুল পরিচিত না হলেও ইতোমধ্যে এটি এদেশে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে। কোয়েল গত ৯০ দশকের দিকে বাংলাদেশে এসেছে। কোয়েল পালনের ক্ষেত্রে কবুতরের মতো নির্দিষ্ট ঘরের প্রয়োজন হয় না বা মুরগির মতো ব্যাপক আকারের ঘরের প্রয়োজন নেই। এশিয়ার অনেক দেশেই কোয়েল বাণিজ্যিকভাবে পালিত হচ্ছে।  দেশগুলো হচ্ছে জাপান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, সৌদিআরব, ইত্যাদি। বাংলাদেশের অনেক জেলাতে কোয়েল পালন হচ্ছে। কোয়েল পালন করার জন্য বাহুল্য কোনো খরচ নেই। বিশেজ্ঞদের দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের জন্য বেশ উপযোগী। কোয়েলকে সহজেই পোষ মানানো যায় তাই বাড়ীর যে কোনো আঙ্গিনা অথবা বাড়ীর ছাদ, ইত্যাদি জায়গায় সহজেই কোয়েল পালন করা যায়। একটি মুরগি পালনের স্থানে মোটামুটি দশটি কোয়েল পালন করা যায়। অত্যন্ত কম পুঁজি বিনিয়োগ করে কোয়েলের খামার স্থাপন করা যায়। কোয়েলের মাংস ও ডিম খুবই সুস্বাদু। এদের মাংস ও ডিমে পর্যাপ্ত পরিমাণ আমিষ, প্রোটিন ও স্নেহজাতীয় পদার্থ বিদ্যমান। কোয়েলের একটি ক্ষুদ্র ডিমে যে পরিমান প্রোটিন রয়েছে, একটি মুরগির বড় আকারের ডিমেও সেই পরিমাণ প্রোটিন বিদ্যমান। আবার দামের দিক দিয়ে একটি মুরগীর ডিমের বিনিময়ে ৩-৪টি কোয়েলের ডিম পাওয়া যায়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণে কোয়েল উল্লে­খযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। আবার দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে কোয়েলের মাংস বিদেশেও রপ্তানি করা যায়।

কোয়েলের জাত
কোয়েলের জাত হিসেবে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় জাপানি কোয়েলকে। কোয়েলের কয়েকটি জাত এবং উপজাত রয়েছে। পৃথিবীতে বর্তমানে ১৭-১৮ জাতের কোয়েল আছে। আবার এদের মধ্যে লেয়ার ও ব্রয়লার উভয়ই রয়েছে। সেগুলো নিম্নরূপ :-
১। জাপানীজ কোয়েল : এই প্রজাতির কোয়েল ছোটখাটো। এদের পালকের রঙ বাদামী তবে সারা গায়ে গাঢ়  চকলেট বা কালো রঙের ছোপ থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক কোয়েলের বুকের ওপরের অংশের পালকের রঙ হলদে বাদামী। আর মুখমন্ডলের রঙ খয়েরী। কোয়েলীর মুখমন্ডল, ঘাড় ও বুকের ওপরের অংশ বাদামী ও এর ওপর কালো বা সাদা ডোরা কাটা দাগ থাকে। বুকের নিচের অংশের পালকের রঙ তামাটে। ঠোঁট হলদে বাদামী থেকে গাঢ় জলপাই বাদামী রঙের হয়।

২। ঢাকাই কোয়েল : ঢাকাই কোয়েল দেখতে পুরোপুরি জাপানীজ কোয়েলের মতো। এদের ঠোঁট, ঘাড় ও পা খাটো, লেজ ছোট। পালকের তুলনায় দেহ ভারী। কোয়েলের বুকের দিকটা অপেক্ষাকৃত গাঢ় বাদামী এবং বড় পরিলক্ষিত হয়। অন্যদিকে কোয়েলীর বুকের দিকটা অপেক্ষাকৃত সাদা এবং সাদা ডোরা দেখা যায়। ঠোঁটের মাথা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত কোয়েল-কোয়েলী লম্বায় যথাক্রমে ১৬.৫ ও ১৯.০ সেমি হয়।
৩। ব্রাউন কোয়েল : ফন কোয়েল নামে জাপানী কোয়েলের একটি জাত আছে যা এদেশে ব্রাউন কোয়েল নামে পরিচিত। এই জাতের কোয়েলের গায়ের পালকের রং বাদামী। সারা দেহ হালকা হলদে বাদামী বা গোলাপী-বাদামী রঙের ওপর সাদা রঙের পেন্সিলের টান রয়েছে। চোখের ওপর সাদা সাদা দাগ থাকে। মুখমন্ডল ও বুকের রঙের ধরন ছাড়া কোয়েল কোয়েলীর পালকের রঙে কোনো পার্থক্য নেই। অন্যান্য জাতের মতো এই জাতের কোয়েলীও আকারে কিছুটা বড় হয়।

লেয়ার কোয়েল : মুরগির মতো কোয়েলের মধ্যে লেয়ার জাত আছে। এই জাতের মধ্যে রয়েছে ফারাও, ইংলিশ হোয়াইট, ম্যানচিরিয়াল গোল্ডেন, ব্রিটিশ রেঞ্জ, ইত্যাদি। এই জাতের কোয়েলকে শুধু ডিমের জন্য পালন করা হয়। একটি পূর্ণবয়স্ক কোয়েল সর্বোচ্চ   ৪ বছর বেঁচে থাকে। এই বয়সের মধ্যে সে অন্ততপক্ষে ৮০০ থেকে ১১০০টি ডিম প্রদান করে থাকে। প্রতিটি ডিমের ওজন ৮ থেকে ১২ গ্রাম হয়। কোয়েলের ডিম দেখতে খুব সুন্দর কারুকার্যখচিত হয়।

ডিমের খোসার ওপর নীল, বেগুনী, খয়েরী ও কালো রঙের ছিট ছিট দাগ থাকে। একটি পূর্নাঙ্গ কোয়েল ১৫০ থেকে ২২০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের হয়ে থাকে। অল্প বয়সে, সাধারণত ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ বয়সে কোয়েলী ডিম পাড়া শুরু করে। সাধারণত একটি ভালো জাতের কোয়েলী বছরে ২৫০ থেকে ৩০০টি পর্যন্ত ডিম প্রদান করে থাকে। এই ডিমগুলোর প্রায় প্রতিটি থেকেই বাচ্চা পাওয়া যায়। এই বাচ্চা পরবর্তীতে ৬ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যেই খাওয়া বা বিক্রির উপযোগী হয়। পাশাপাশি এই বয়সে তারা ডিম দেয়া শুরু করতে পারে। কোয়েল সাধারণত দিনের বেলা বা বিকেলে ডিম দিয়ে থাকে।
ব্রয়লার কোয়েল : মুরগির মতো কোয়েলের মধ্যে ব্রয়লার জাত বিদ্যমান। এই জাতের মধ্যে উল্লে­খযোগ্য হলো আমেরিকান বব হোয়াইট, ইন্ডিয়ান হোয়াইট, ব্রেস্টেড কোয়েল, ইত্যাদি। এই জাত পালন করা হয় শুধুমাত্র মাংস উৎপাদনের জন্য। কোয়েলের মাংসে চর্বির পরিমাণ খুব কম বলে যে কোনো রোগীর পথ্য হিসেবে কোয়েলের মাংস ব্যবহৃত হতে পারে। কোয়েলের ডিম পর্যাপ্ত পুষ্টির চাহিদাও মেটাতে পারে। এই কারণে বাণিজ্যিকভিত্তিতে কোয়েল পালন অত্যন্ত লাভজনক।
পালন পদ্ধতি ও বাসস্থান
ইদানিং আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাঁস মুরগির খামারের পাশাপাশি কোয়েলের খামার তৈরি হয়েছে এবং প্রায় প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে। কোয়েলের আকার ক্ষুদ্র বলে এদের লালন পালনের জন্য বিস্তৃত জায়গার প্রয়োজন হয় না বা বিশেষ কোনো জায়গা বা স্থানের প্রয়োজন হয় না। কোয়েলের থাকার জায়গা বা বাসস্থানের জন্য হাঁস বা মুরগির মতো ব্যবস্থা নিতে হয় না। তবে অন্য সব গৃহপালিত পশু-পাখির মতো এদের বাসস্থানে যেন পর্যাপ্ত আলো বাতাস থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেকে হাঁস-মুরগির খামার না করেও শুধু কোয়েলের খামার করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এর মাংস এবং ডিম বিদেশে রপ্তানি করে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।
লিটারে কোয়েল পালন

বাণিজ্যিকভাবে কোয়েল পালনের জন্য লিটার পদ্ধতির চেয়ে কেইজ পদ্ধতি অধিক লাভজনক। মেঝে এবং খাঁচায় দুই পদ্ধতিতে কোয়েল পালন সু-প্রতিষ্ঠিত। তুষ, বালি, ছাই, কাঠের গুঁড়া প্রভৃতি দ্রব্যাদি কোয়েলের লিটার হিসেবে মেঝেতে ব্যবহার করা যায়। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তুষ উপযোগী এবং সহজলভ্য। এ ছাড়াও কাঠের গুঁড়া ব্যবহার করা যেতে পারে। অবস্থাভেদে লিটার পরিবর্তন আবশ্যক, যেন কোনো রকম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি না হয়। মেঝেতে ডীপ লিটার পদ্ধতি অবলম্বণ করা শ্রেয়। প্রথমেই ৪-৫ ইঞ্চি পুরু তুষ বিছিয়ে দিতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে যেন লিটার ভিজা না থাকে। স্বাভাবিকভাবে শীতকালে লিটার পরিবর্তন এবং স্থাপন করতে হবে। অন্য ঋতুতে লিটার পরিবর্তন এবং স্থাপন করলে লিটারে শতকরা ১-২ ভাগ চুন মিশিয়ে দিতে হবে যেন লিটার শুষ্ক এবং জীবাণুমুক্ত হয়। আর্দ্র পরিবেশে সপ্তাহে একদিন লিটার নাড়াচাড়া বা উলট-পালট করে দিতে হবে। বর্ষাকালে লিটার স্যাঁতসেঁতে বা ভিজাভাব পরিলক্ষিত হলে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। লিটারে কোনো অবস্থাতেই যেন পানি না পড়ে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। লিটার পদ্ধতিতে এমোনিয়া গ্যাস তৈরি হতে পারে। সে কারণে মাঝে মাঝে লিটার নাড়াচাড়া দিয়ে গ্যাস বের করে দিতে হবে।
খাঁচায় কোয়েল পালন

একটি খাঁচার ওপর আরেকটি খাঁচা স্থাপন করে অল্প জায়গায় অনেক কোয়েল পালন করা যায়। ছোট জোড়া খাঁচা বা কেইজ কোয়েল পালনের জন্য অধিকতর উপযোগী। বাচ্চা অবস্থায় প্রতিটি কোয়েলের জন্য খাঁচায় ৭৫ ব.সেমি এবং মেঝেতে ১০০ ব.সেমি জায়গার দরকার। অন্যদিকে বয়স্ক কোয়েলের ক্ষেত্রে খাঁচায় প্রতিটির জন্য ১০৫ ব.সেমি এবং মেঝেতে ২৫০ ব.সেমি জায়গার প্রয়োজন। দুইটি ডিম পাড়া কোয়েলীর জন্য একটি ১২.৭ x ২০.৩ সে. (৫ x ৮ ইঞ্চি) মাপের খাঁচাই যথেষ্ট। সর্বোপরি বাচ্চা রাখার খাঁচাসহ পরিণত বয়সের কোয়েলের খাঁচাগুলোতে যেন ইঁদুর, ছুঁচো ইত্যাদি ঢুকতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে খাঁচা তৈরি করতে হবে। কোয়েলের ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তাপমাত্রা ৫০-৭০০ ফা. হওয়া ভালো। কোয়েলের ঘরে বা খাঁচায় যেন বৃষ্টির পানি প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে চটের বস্তা দিয়ে খাঁচা বা ঘরের বেড়া ঘিরে রাখতে হবে।
খাঁচায় ৫০টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ১২০ সেমি. দৈর্ঘ্য, ৬০ সেমি. প্রস্থ এবং ৩০ সেমি. উচ্চতা বিশিষ্ট একটি খাঁচার প্রয়োজন। খাঁচার মেঝের জালিটি হবে ১৬-১৭ গেজ। তিন সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চার খাঁচার মেঝের জালের ফাঁক হবে ৩ মিমি.ী ৩ মিমি. এবং বয়স্ক কোয়েলের খাঁচার মেঝের জালের ফাঁক হবে ৫ ী ৫ মিমি.। খাঁচার দুই পার্শ্বে একদিকে খাবার পাত্র অন্যদিকে পানির পাত্র সংযুক্ত করে দিতে হবে। খাঁচায় ৫০টি কোয়েলের জন্য তিন সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ২৫ সেমি. বা ১০ ইঞ্চি উচ্চতা বিশিষ্ট ২৮ ব.সে.মি. বা ৩ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন।
কোয়েলের খাদ্য ব্যবস্থাপনা
কোয়েল পালনে তেমন খরচ নেই। এ কারণেই বলা হয়ে থাকে যে, কোয়েলের জন্য আলাদা তেমন কোনো সুষম খাদ্যের প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবার পর কিছুটা বিশেষ যতেœর প্রয়োজন হয়। এই সময় কোয়েলের বাচ্চাকে সুষম খাদ্য প্রদান করতে হয়। কোয়েলেরে জন্য বিশেষ কোনো খাবার সরবরাহ করতে হয় না। এদের খাদ্য চাহিদা কম অথচ, শারীরিক বৃদ্ধি খুব বেশি। এরা খুব দ্রুত বাড়তে পারে। দিনে ২০ থেকে ৩০ গ্রাম খাবার দিলেই এরা এদের শারীরিক ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পারে। কোয়েলের জন্য খাবার এবং পানির সু-ব্যবস্থা এর খাঁচাতেই রাখতে হবে। বাচ্চা, বাড়ন্ত অথবা প্রজনন কাজে ব্যবহৃত কোয়েলকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। এদের খাদ্যের শ্রেণীও তিন ধরনের হওয়া উচিত। এদের খাদ্যে আমিষ ও ক্যালোরির পরিমাণ নিম্নোক্ত হওয়া উচিত।
স্টার্টার (০-৩ সপ্তাহ), বাড়ন্ত (৪-৫ সপ্তাহ) এবং লেয়ার বা ব্রিডার (৬ সপ্তাহ পর্যন্ত)। স্টার্টার কোয়েলের জন্য প্রতি কেজি খাবারে ২৭% প্রোটিন এবং ২৮০০ কিলো ক্যালোরী বিপাকীয় শক্তি থাকবে। বাড়ন্ত কোয়েলের জন্য প্রতি কেজি খাবারে ২৩% পোটিন এবং ২৭০০ কিলোক্যালোরী বিপাকীয় শক্তি এবং লেয়ার কোয়েলের জন্য প্রতি কেজি খাবারে ২২-২৪% প্রোটিন এবং ২৭০০ কিলোক্যালরী বিপাকীয় শক্তিতে ভালো ফল পাওয়া যায়। ডিমপাড়া কোয়েলীর প্রতি কেজি খাবারে ২.৫-৩.০% ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়।
সাধারণভাবে প্রতি কেজি খাদ্য অনুপাতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আমিষ এবং ২৫০০ থেকে ৩০০০ কিলোক্যালোরি বিপাকীয় শক্তি বিদ্যমান থাকা প্রয়োজন। মুরগির খামারে ব্যবহৃত পাত্রাদির চেয়ে আকারে একটু ছোট পাত্র কোয়েলের খামারে ব্যবহার করা হলে ভালো হয়। তবে কোয়েল খুব ঘন ঘন পানি পান করে। তাই কোয়েলের খাঁচার কয়েকটি স্থানে পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে পানির পাত্রগুলো যেন খাঁচার সাথে শক্ত করে আটকানো থাকে যাতে পানির পাত্র উপচে বা উল্টে পড়ে কোয়েলের গা ভিজে না যায়।
কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন

শুধুমাত্র কিছু প্রজাতির কোয়েলী সাদা রঙের ডিম পাড়ে। তাছাড়া বেশির ভাগ কোয়েলীর ডিম বাদামী এবং গায়ে ফোঁটা ফোঁটা দাগ আছে। কোয়েলের প্রতিটি ডিমই আসলে ভবিষ্যতের পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা অর্থাৎ প্রতিটি ডিম থেকেই একটি বাচ্চা ফুটতে পারে। তবে বাচ্চা ফোটার জন্য ডিম তৈরি করতে হলে একটি পুরুষ কোয়েলের সাথে তিনটি স্ত্রী কোয়েলকে কিছুদিন একসাথে রাখতে হবে। কোয়েল কোয়েলীকে এক সাথে রাখার তিন দিন পর থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য ডিম সংগ্রহ করতে হবে। কোয়েলী থেকে পুরুষ কোয়েল সরিয়ে নেয়ার একদিন পর থেকে ফোটানোর জন্য ডিম সংগ্রহ করা উচিত হবে না। কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য ইনকিউবিটর ব্যবহার করা হয়। তবে যাদের ইনকিউবিটর নেই তারা সাধারণত দেশী মুরগীর সাহায্যে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে থাকেন। কারণ কোয়েল তার ডিমে তা দিতে পারে না। বাচ্চা ফুটাতে মুরগী বা ইনকিউবিটরের সাহায্য নিতে হয়।
স্বাভাবিক অবস্থায় ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে ১৭ থেকে ১৮ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সর্বোচ্চ ২০ দিনের মধ্যেই বাচ্চা ফুটে বের হয়। তবে বাচ্চা ফোটার পরই সেগুলো পরিবেশের সাথে সরাসরি মানিয়ে নিতে পারে না। কারণ, কোয়েলের বাচ্চা খুবই সংবেদনশীল। সদ্য ফুটন্ত কোয়েলের বাচ্চা খুবই ছোট থাকে। এক দিন বয়সের কোয়েলের বাচ্চার ওজন মাত্র ৫-৭ গ্রাম থাকে। তাই ঠান্ডা বা গরম কোনোটাই এরা সহ্য করতে পারে না। এদের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। কোয়েলের বাচ্চা পালনের সময় অতিরিক্ত যতেœর প্রয়োজন হয়। এই সময়টাতে বাচ্চার প্রতি বিশেষ যতœবান হতে হবে। এই সময় বাচ্চাকে কোয়েলের সাধারণ খাঁচা থেকে সরিয়ে ব্রুডিং ঘরে নিয়ে যাওয়া ভালো। কারণ, সেই সময় বাচ্চা কোয়েলের বাহ্যিক উত্তাপ প্রয়োজন হয়। ব্রুডিং পদ্ধতিতে সেই সময় কোয়েলের বাচ্চার শরীর গরম করতে হয়। এই বাচ্চা পরিণত কোয়েলে রূপান্তরিত হতে ৬-৭ সপ্তাহ সময় লাগে। বাচ্চার বয়স ১৪-২০ দিন হওয়া পর্যন্ত কৃত্রিম উত্তাপের জন্য ব্রুডিং-এর ব্যবস্থা করতে হয়। ডিম থেকে ফোটার পর বাচ্চা উক্ত সময় পর্যন্ত স্পর্শকাতর ও দুর্বল থাকে। এই সময় এদেরকে প্রয়োজনীয় ক্যালরিযুক্ত খাবার প্রদান করতে হয়। তা না হলে সদ্যজাত বাচ্চা ক্যালোরির অভাবে শরীর ঠান্ডা হয়ে মারা যেতে পারে। বাচ্চা কোয়েলের ১ম হতে ৪র্থ সপ্তাহ পর্যন্ত মৃত্যুহার অনেক বেশি। পরবর্তীতে এটা কমে সর্বোচ্চ ১০% বা তার কম হয়।
সাধারণভাবে বাচ্চা ফুটলে সেগুলোকে আলাদা খাঁচায় স্থানান্তর করা উচিত। কারণ, তাহলে বাচ্চার জন্য প্রয়োজনীয়  ব্রুডিং-এর ব্যবস্থা করা সম্ভবপর হয়ে থাকে। মুরগির বাচ্চার মতো একই পদ্ধতিতে কোয়েলের বাচ্চাকে ব্রুডিং বা কৃত্রিম তাপ প্রদান করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। বড়ো আকারের কোয়েলের খামারে বাচ্চা রাখার জন্য আলাদা ব্রুডার খাঁচা তৈরি করা হয়ে থাকে যাতে করে বাচ্চা ডিম ফুটে বের হবার প্রায় সাথে সাথে সেই খাঁচায় স্থানান্তর করা যায়। স্ত্রী কোয়েল এবং পুরুষ কোয়েল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পৃথক পৃথকভাবে রাখতে হবে।
ইনকিউবেটরে বসানোর পূর্বে ডিমের যত্ন
দিনে অন্তত দু’বার ফোটানোর ডিম সংগ্রহ করতে হবে এবং ১৫.৫০০ সে. তাপমাত্রায় ৮০% আর্দ্রতায় ৭-১০ দিন সংরক্ষণের জন্য ২০ মিনিট ফরমালডিহাইড গ্যাসে রাখতে হবে। কোয়েলের ডিমের খোসা ভাঙ্গার প্রবণতা বেশি থাকায় ডিম অত্যন্ত সাবধানে নাড়াচাড়া করতে হয়। ডিম দূষিত হওয়ার প্রধান উৎস এবং রোগ বিস্তারের মুখ্য কারণ হচ্ছে ময়লাযুক্ত ইনকিউবেটর অথবা হ্যাচারী। হ্যাচারী প্রতিবার ব্যবহারের পর প্রতিটি হ্যাচিং ইউনিট ভালোভাবে ধৌত করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বাজারে যে সমস্ত উন্নতমানের জীবাণুনাশক পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত করা যেতে পারে। ময়লাযুক্ত ডিম রোগজীবাণুর প্রধান উৎস। কাজেই সর্বদা পরিষ্কার-পরিচছন্ন ডিম বসাতে হবে। বাচ্চা ফুটানোর ডিম কখনও ধোয়া উচিত নয়। ডিম সংগ্রহ করার পর ডিম ফিউমিগেশন করা উচিত অথবা বিকল্প ইনকিউবেটরে ডিম বসানোর ১২ ঘন্টার মধ্যে ফিউমিগেশন করা উচিত।
কোয়েলের বাচ্চার ব্রুডিং ব্যবস্থাপনা ও যত্ন

কোয়েলের বাচ্চার জন্য কাঙ্খিত তাপমাত্রা এবং খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বজায় রাখতে হবে। এ সময় কোনো রকম ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা বা কোনো রকম ধকল হলে এর বিরূপ প্রভাব দৈহিক বৃদ্ধি, ডিম উৎপাদন এবং জীবনী শক্তির ওপর পড়বে। বাচ্চাকে তাপ দেয়া বা ব্রুডিং সাধারণত দুই পদ্ধতিতে করা যায়। যেমনঃ খাঁচায় বা কেইজে ব্রুডিং এবং মেঝেতে ব্রুডিং। যে পদ্ধতিতেই তাপ দেয়া হোক না কেন তাপমাত্রার প্রয়োজনীয়তা একই রকম । প্রথম সপ্তাহে সাধারণত ৩৫০সে. তাপমাত্রা দিয়ে ব্রুডিং আরম্ভ করা হয় এবং এই তাপমাত্রা প্রতি সপ্তাহে পর্যায়ক্রমে ৩.৫০ সে. কমিয়ে নিম্নলিখিত মাত্রায় আনতে হবে।
বাচ্চার বয়স    তাপমাত্রা
প্রথম সপ্তাহ    ৩৫০ সে. (৯৫০ ফাঃ)
দ্বিতীয় সপ্তাহ    ৩২.২০ সে. (৯০০ ফাঃ)
তৃতীয় সপ্তাহ    ২৯.৫০ সে. (৮৫০ ফাঃ)
চতুর্থ সপ্তাহ    ২৭.৬০ সে. (৮০০ ফাঃ)
ওপরে তাপমাত্রার যে তালিকা উল্লেখ করা হলো তা হলো ব্রুডারের তাপমাত্রা। থার্মোমিটারের সাহায্যে সরাসরি এই তাপমাত্রা নিরূপণ করা যায়। তবে থার্মোমিটার ছাড়াও ব্রুডারের তাপ সঠিক হয়েছে কি না তা ব্রুডারের বাচ্চার অবস্থান দেখে বোঝা যায়। বাচ্চারা যদি বাল্বের কাছে জড়োসড়ো অবস্থায় থাকে তবে বুঝতে হবে তাপমাত্রা কম হয়েছে। আর যদি বাল্ব থেকে দূরে গিয়ে থাকে তবে বুঝতে হবে তাপমাত্রা অধিক। অন্যদিকে বাচ্চাগুলো যদি চারিদিকে সমভাবে ছড়িয়ে থাকে এবং স্বাভাবিক ঘোরাফেরাসহ খাদ্য পানি গ্রহণ করতে থাকে তবে বুঝতে হবে পরিমিত বা সঠিক তাপমাত্রা আছে।
বাংলাদেশে গরমের সময় এক সপ্তাহ এবং শীতের সময় দুই, তিন, বা চার সপ্তাহ পর্যন্ত কৃত্রিম উপায়ে তাপ দিতে হয়। গবেষণা থেকে জানা যায় যে, দুই সপ্তাহ খাঁচায় ব্রুডিং করে পরবর্তীতে মেঝেতে পালন করলে মৃত্যু হার অনেক কম হয় এবং বাচ্চার ওজন অপেক্ষাকৃত বেশি হয়। কোয়েলের মৃত্যুহার নির্ভর করে এদের উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার ওপর। ব্রুডিংকালীন পর্যাপ্ত তাপ প্রদান করতে না পারলে বাচ্চার মৃত্যুহার নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। কাজেই এ সময়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আর বয়স্ক কোয়েলের মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে খুব কম।
ইনকিউবেটরে বাচ্চা ফোটার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্রুডিং ঘরে এনে প্রথমে গ্লুকোজ মিশ্রিত পানি এবং পরে খাদ্য দিতে হবে। খাদ্যের সাথে পর পর তিনদিন গ্লুুকোজ পানি পান করতে দেয়া ভালো। তারপর যে কোনো একটি মাল্টি ভিটামিন পানির সঙ্গে তিন দিন সরবরাহ করতে হবে। প্রথম সপ্তাহ খবরের কাগজ বিছিয়ে তার ওপর খাবার ছিটিয়ে দিতে হবে এবং প্রতিদিন খবরের কাগজ পরিবর্তন করতে হবে। এক সপ্তাহ পর ছোট খাবার পাত্র বা ফ্ল্যাট ট্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। পানির পাত্রে বাচ্চা যাতে পড়ে না যায় সেজন্য মার্বেল অথবা  কয়েক টুকরা পাথর খন্ড পানির পাত্রে রাখতে হবে। সর্বদাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পানি সরবরাহ করতে হবে।
অন্যান্য পোল্ট্রির মত কোয়েলের জীবন চক্রকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ বাচ্চা, বাড়ন্ত এবং বয়স্ক। অনেকে আবার কোয়েলের জীবনচক্র সংক্ষিপ্ত বিধায় তাকে শুধু বাচ্চা এবং বয়স্ক এই দুইভাগে ভাগ করেন। স্বাভাবিকভাবে ১-৩ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত বাচ্চা বলা হয়। ৩-৫ সপ্তাহ বয়সের কোয়েলকে বাড়ন্ত এবং      ৫ সপ্তাহের অধিক বয়সের কোয়েলকে বয়স্ক বলে। অধিকতর সহজ ব্যবস্থাপনার জন্য কোয়েলের জীবন চক্রকে দুই ভাগে যেমনঃ ১-৩ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চা এবং তিন সপ্তাহের বেশি বয়সের কোয়েলকে বয়স্ক কোয়েল বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
কোয়েল পালনের বিভিন্ন সুবিধাসমূহ
কোয়েল পালন করলে অসুবিধার চেয়ে সুবিধার পরিমাণ বেশি। নিম্নে কোয়েল পালনের বিভিন্ন সুবিধা সমূহ উল্লেখ করা হলো।
১। কোয়েল দ্রুত বর্ধনশীল।
২। অল্প বয়সে যৌনপরিপক্কতা লাভ করে। মাত্র ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে।
৩। সঠিক যত্ন ও ব্যবস্থাপনায় বছরে ২৫০ থেকে ২৮০টি ডিম পাড়ে।
৪। অত্যন্ত কম পুঁজি বিনিয়োগে কোয়েলের খামার প্রতিষ্ঠা করা যায়।
৫। কোয়েল ছোট পাখি, এদের পালনের জন্য বিস্তৃত জায়গার প্রয়োজন হয় না। একটি মুরগির জায়গায় ১০টি কোয়েল পালন করা যায়।
৬। কোয়েলের রোগব্যাধি কম হয়, এজন্য বাড়তি চিকিৎসা খরচ নাই।
৭। কোয়েলের খাদ্য চাহিদা খুবই কম। ২০-৩০ গ্রাম খাবার দিলেই এদের শারীরিক ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়।
৮। স্বাভাবিক অবস্থায় ১৮-২০ দিনের মধ্যে বাচ্চা ফুটে বের হয়।
৯। স্বাভাবিক লালন-পালনে ৪ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
১০। বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের জন্য উপযোগী।
কোয়েলের রোগ ব্যবস্থাপনা
রোগব্যাধির দিক থেকে কোয়েল পালন খুবই লাভজনক বিনিয়োগ। কারণ, কোয়েলের রোগব্যাধি প্রায় হয় না বললেই চলে। যেহেতু কোয়েলের রোগব্যাধি কম হয় সুতরাং এদের জন্য বাড়তি চিকিৎসা ব্যবস্থার তেমন প্রয়োজন হয় না। তবে মাঝে মাঝে কোয়েলকে রোগাক্রান্ত হতে দেখা যায়। কোয়েল রোগাক্রান্ত হলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। কোনো কোয়েল অসুস্থ হলে সাথে সাথে তাকে সুস্থ কোয়েলের খাঁচা থেকে সরিয়ে নিতে হবে। অসুস্থ কোয়েলের সংস্পর্শে থাকলে বাকি সুস্থ কোয়েলও অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। খাঁচায় কোনো কোয়েল মারা গেলে সাথে সাথে তার কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। মরা কোয়েল পুঁড়িয়ে বা মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে হবে।
কোয়েলের রোগব্যাধি
আমাশয়
কোয়েলের বিভিন্ন রোগব্যাধির মধ্যে আমাশয় উল্ল­খ্যযোগ্য। এই রোগ হলে কোয়েলের ঘন ঘন পায়খানা হয়, খাবার গ্রহণে অনীহা দেখা দেয় এবং পাশাপাশি কোয়েলের স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। এই অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সালফার জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে। তবে সবচেয়ে বড়কথা সুষ্ঠুভাবে কোয়েল পালন করতে হলে এদের থাকার জায়গা বা বাসস্থান, খাবার জায়গা ইত্যাদি স্থানগুলো শুকনো বা পরিষ্কার রাখতে হবে।
ব্রুডার নিউমোনিয়া
আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে বাচ্চা কোয়েলের মৃত্যু হতে পারে, যদি না ব্রুডারে থাকাকালীন তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা যায়।  তাই ব্রুডিং করার সময়  অর্থাৎ প্রথম দুই সপ্তাহ বাচ্চা কোয়েলকে নজরে রাখতে হবে। কারণ ওই সময় এসপারজিলাস ফিউমিগেটাস নামক ছত্রাকের প্রভাবে এই ব্রুডার নিউমোনিয়া হয়।
লক্ষণ হিসেবে বাচ্চা পাখী ঝিমায়, দুর্বল হয়ে পড়ে ও খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। জোরে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে থাকে, চোখ লাল হয়ে যায়, চোখ থেকে পানি বেরোতে থাকে। এই রোগে মৃত্যুর হার শতকরা ২-৩ ভাগ। কিন্তু আক্রান্তের হার শতকরা ৫০ ভাগ। চিকিৎসা হিসেবে ২ গ্রাম ক্যালসিয়াম প্রোপিওনেট ১০০ কেজি খাবারের সাথে মেশাতে হবে। এন্টিবায়টিক খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আলসারেটিভ এনটারাইটিস
কোয়েল ডিজিজের আর এক নাম আলসারেটিভ এনটারাইটিস। এটি কোয়েলের একটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ। রোগের লক্ষণ হিসেবে পাতলা পায়খানা হয়, দুর্বল হয়ে পড়ে, খিঁচুনি হয়, ক্ষুদ্রান্ত্রে ও সিকামে ক্ষত দেখা যায়। চিকিৎসা হিসেবে এন্টিবায়োটিক খাওয়াতে হবে। পাখি খুব বেশি মারা গেলে স্থানীয় প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়াতে হবে।
সূত্র
১। পশুসম্পদ ও পোল্ট্রি উৎপাদন প্রযুক্তি নির্দেশিকা।
২। ইন্টানেট।
Share on Google Plus

About joy bangla

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments :